Skip to main content

রোমান্টিক প্রেমের গল্প

অভিমানী!

(১) বিয়ের অনুষ্ঠানে এক একা বসে আছে লিমা। প্রচন্ড বিরক্ত হচ্ছে সে। বিরক্ত লাগছে তার অনেক বেশি। আগেই জানতো এখানে এসে একা থাকতে হবে, তাই আসতেই চায়নি সে। কিন্তু মায়ের পিড়াপীড়িতে আসতে বাধ্য হয়েছে। কোন কাজ না পেয়ে ফেসবুকে লগইন করলো। করেই দেখে অনলাইনে রাকিব, লিমার বয়ফ্রেন্ড !
- কি করো, জান ? ( লিমাকে অনলাইনে দেখামাত্রই রাকিবের মেসেজ )
- কিছু না। মেজাজ খারাপ এখন।
- হইছে টা কি ?
- কথা বলবা না।
- ওকে।
- ওকে মানে কি ?
- তুমিই তো বললা কথা বলতে না।
- তাই বলে আমার সাথে কথা বলবা না ?
- আরেহ আশ্চর্য তুমিই তো বললা !
- ও বুঝছি তুমি তো এখন মেয়েদের সাথে চ্যাটিং-এ ব্যস্ত। করো করো যত ইচ্ছা চ্যাট করো।
- আজব তো। হু করতেছি আমি চ্যাট। তোমার কি তাতে ?
- কি ??????????
- জানো আমি এখন ১০ জন মেয়ের সাথে চ্যাট করতেছি !
প্রচন্ড রাগে ফেসবুক থেকে বের হয়ে যায় লিমা !
ইচ্ছা করেই রাকিব কাজটা করে। লিমাকে রাগিয়ে দেয় সে। আর লিমাও একটু আহ্লাদী মেয়ে, মন মত কিছু না হলেও হয়েছে, প্রচন্ড রেগে যায় সে। বরাবরের মতই এখন রাগে ফুঁসছে সে। ফর্সা, গোলগাল চেহারাটা রক্ত বর্ণ ধারণ করেছে। একটু পরেই আবার ফেসবুকে গেলো। গিয়ে নিজের আইডি থেকে লগআউট করে রাকিবের আইডিতে গেলো। গিয়ে দেখে কিসের কি ! সে বাদে সর্বশেষ মেসেজিং করেছে তার বন্ধুদের সাথে। কোন মেয়ের সাথেই তার চ্যাটিং হয়নি। তারমানে মিথ্যা বলেছে সে ! আরেকদফা রেগে গেলো লিমা। আবার নিজের আইডিতে গিয়ে রাকিবকে মেসেজ দিলো, " আমার সাথে মিথ্যা কথা বললা কেন ? "
- তারমানে তুমি আমার আইডিতে লগইন করেছিলে ? ছি ছি ! না বলে অন্যের আইডিতে যাও, লজ্জা নাই তোমার ?
- কি ????????????
- এত কি কি করো কেন ?
- তোমার সাথে কথা নাই।
- আরেহ আজব !
রিপ্লাই দেয় না লিমা। রেগে মেগে ফেসবুক থেকে বের হয়ে গেছে সে। একটু পরে আবার লগইন করে দেখে একটা লাভ স্টোরি দিয়েছে রাকিব, নায়ক যথারীতি আর্মি অফিসার !
- আচ্ছা তুমি এত আর্মি আর্মি করো কেন গল্পে ?
- এনি প্রব্লেম ?
- মানে কি ?
- মানে হচ্ছে আমার গল্পের প্লটের সাথে আর্মি অফিসারেরা বেশি খাপ খায়, তাই ওভাবে দেই। আমি ওভাবে কল্পনা করে লিখতে পছন্দ করি।
- না তুমি এভাবে বলো নাই !
- মানে ?
- তুমি প্রথমে অন্যভাবে বলেছ।
- আরেহ আজব।
- কি আজব ?
- তুমি ! নারায়ণগঞ্জের মেয়ে তো, একটু বেশি সন্দেহপ্রবণ ! সবসময় একটু বেশি বুঝে !
- তোমার সাথে কথা নাই।
- উফফ !! কিছু হইলেই খালি কথা নাই, কথা নাই বলে গান শুরু করে দিবে মেয়েটা !
- তুমি মুড়ি খাও।
- তুমি বিয়েতে গেছো না ?
- হুম।
- তাইলে তুমি ভালো করে মোরগ-পোলাও খাও ! তাইলে যদি মাথায় একটু বুদ্ধি হয় !
মেসেজ দেখে আবার রেগে গেলো লিমা। এবার আর কথাই নাই। সোজা আইডি ডি-অ্যাক্টিভ করে বের হয়ে গেলো।
পরদিন বিকালে পার্কে বসে আছে রাকিব। গতরাতে লিমাকে প্রচন্ড রাগিয়ে দিয়েছে সে ! যে কারণে মেয়েটা প্রথম প্রথম তার ফোনও ধরনি।
মোবাইলের মেসেজে অনবরত সরি বলার বলার পরে একবার ফোন ধরেছিল। ফোনেও অনেকবার সরি বলেছে, লিমা কোন কথা বলেনি। তাই তাকে বিকালে এখানে আসতে বলেছে। যতই কথা না বলুক রাকিব জানে লিমা না এসে পারবে না। যথা সময়েই লিমা এসে হাজির। রাকিবকে দেখেই, " তোমার সাথে কোন কথা নাই। " মুচকি হাসে রাকিব। রাগলে লিমাকে দেখতে বেশি সুন্দর লাগে। তাই ইচ্ছা করেই সে তাকে রাগায়। আর সে ভালো করেই।জানে লিমার রাগ কি করে ভাঙ্গাতে হয় !
পকেট থেকে কিটক্যাটের একটা বড় প্যাকেট বের করে বললো, " ভেবেছিলাম তোমাকে দিবো কিন্তু এখন এটা দেওয়ার জন্য মনে হয় অন্য একজন মেয়ে খুঁজতে হবে !
" কি ? " চোখে পাকিয়ে বলে লিমা। " এটা আমার জন্য আনোনি ?
- এনেছিলাম তোমার জন্যই। কিন্তু তুমি তো নিতে চাও না ...
- ফাজিল।
আর রাগ ধরে রাখতে পারলো না লিমা। হেসে ফেললো সে। তার মধ্যে এখনো বাচ্চাদের মত চকলেটপ্রীতি কাজ করে। আর সেটা জানে রাকিব। লিমার রাগ ভাঙ্গাতে সে তাই চকলেটের ব্যবহারই করে !
এভাবেই তাদের খুনসুটির সমাপ্তি ঘটে যেটা গত দুই বছর ধরে প্রতিনিয়ত চলে আসছে !
পার্কে বসে রাকিবের কাঁধে মাথা রেখে চকলেট খাচ্ছে লিমা !
আর দুজনে নীরবে উপভোগ করছে পড়ন্ত বিকেলের আশ্চর্য সুন্দর, মায়াবী পরিবেশটা !
দুজন প্রেমিক-প্রেমিকার এ দৃশ্যটা আশ্চর্য সুন্দর, সমস্ত সৌন্দর্যকে যেন হার মানিয়ে যায় ! অসাধারণ সুন্দর আর মায়াবী পড়ন্ত বিকেলও এ দৃশ্য দেখে যেন হিংসায় মরে যায় !



অনুভবে ভালোবাসা!

(২) ভার্সিটির লাইব্রেরী রুম।গুড়ি গুড়ি কথার আওয়াজ হচ্ছে চারপাশে।পরিমিত মাত্রায় এসি চলছে।তবু বেশ শীত শীত লাগছে রাহাতের।লাইব্রেরীগুলোতে আজকাল পড়ালেখার চেয়ে আড্ডা হয় বেশি।তবু কেউ কেউ পড়তে আসে।যেমন এসেছে মেয়েটি।রোজ পূর্ব দিকের কোনার সিটটাতে বসে ও।হাতের কাছে থাকে রাজ্যের বই।এই মেয়ের চোখে মুখে পড়ুয়া আঁতেলের কোন ছাপ নেই।তবু মেয়েটা বেশ পড়ুয়া জানে রাহাত।গত তিন মাস ধরেই মেয়েটাকে লক্ষ্য করছে সে।ক্লাস শেষের পর ও লাইব্রেরীতে এসে বসে থাকে।মাঝে মধ্যে এক দুইটা বই নেয়।সেগুলো আর পড়া হয় না ওর।ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অগোচরে মেয়েটাকেই দেখে।ওকেই ভাবে।মেয়েটা চশমা পরে।এই মেয়ের পরার দরকার ছিল গোল চশমা।মাথার চুলগুলো থাকবে দুই বেণী করা।
তাহলে পড়ুয়া স্বভাবের সাথে মানাতো।তবু ব্যাংস করে কাটা চুল,ফুল ফ্রেমের চারকোনা চশমা সবই অদ্ভুত সুন্দর ভাবে মানিয়ে গেছে ওর সাথে।নোট তোলার সময় তিন রঙের কলম নিয়ে বসে মেয়েটা।একে দেখলেই পড়ালেখার একটা লিলুয়া ইচ্ছা জাগে রাহাতের।আপাতত মেয়েটার হাতে ডাইন্যামিক সার্কিট নেটওয়ার্কিং এর একটা বই।তার মানে আর কিছুক্ষণ বাদেই চলে যাবে মেয়েটা।
বিষয়টাতে ওর খুব আগ্রহ আছে বোধহয়।প্রতিদিনই যাওয়ার আগে মিনিট বিশেক এই বিষয়ের বই পড়ে ও।ঘড়ির কাটা এত দ্রুত চলে কেন!ভাবতে ভাবতে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে রাহাত।তবু ও জানে ওর করার কিছু নেই।এসব মেয়েদের ভালো বন্ধু হওয়া যায়,নোট শেয়ার করা যায়।কিন্তু প্রেমের প্রস্তাব দেয়া যায় না।
পড়ুয়া মেয়েদের সম্পর্কে প্রথম ধারণা হয় ক্লাস নাইন এ থাকতে।রাহাতের বন্ধু ইমন পছন্দ করত স্কুলের সেকেন্ড গার্ল কে।কিন্তু বলার সাহস করতে পারত না।শেষমেষ রাহাতের কাঁধে দেয়া হয় কথা বলার দায়িত্বটা।সেদিন ছিল ফিজিক্স পরীক্ষা।জঘন্য রকমের একটা পরীক্ষা শেষে ও আর ইমন অপেক্ষা করছিল মেয়েটার জন্য।নিতুকে আসতে দেখে এগিয়ে যায় রাহাত।
-এক্সকিউজ মি
-আমাকে বলছেন?
-জী।তোমার সাথে একটু কথা বলতে চাচ্ছি।
-কি কথা বলবেন তা তো জানিই।পরীক্ষার সময় এসব চিন্তা ভাবনার সময় পান কোত্থেকে?আজকের প্রশ্নটা কি কঠিন হয়েছে দেখেছেন?সেসব দেখবেন কেন।সেসব দেখলে তো এরকম আজাইরা কাজ করতে পারবেনা না।কি বলার আছে বলেন দেখি।
এত গুলো কথা শুনে আর বলার কিছু পায়না রাহাত।চলে যাবার সময় মেয়েটা আবার ডেকে বলে,"খুব তো খুশি মনে এসেছিলেন কথা বলতে।ফিজিক্সে কত পেলেন খাতা পাওয়ার পর জানাতে আইসেন।"
সেবারের পরীক্ষায় রাহাত পায় ৪৩।এই নাম্বার নিয়ে কোন মেয়ের সামনাসামনি হওয়া যায় না।এর পরের বছর অবশ্য ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে পুরস্কার পায় রাহাত।তবু ভালোর উপর খারাপ ধারণা যতটা সহজে স্থান পায় খারাপ ধারণা মুছে ভালোর জায়গা ততো সহজে হয়না।
লাইব্রেরী থেকে বেরিয়ে নিচে দাঁড়াল রাহাত।এই মুহূর্তটায় নিজেকে খুব অসহায় লাগে রাহাতের।প্রেম ব্যাপারটা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।একটা প্রক্রিয়ার মাঝে দিয়ে তা ভালোবাসায় রূপ নেয়।রাহাত জানে সে এখন সেই প্রক্রিয়ার মাঝে দিয়েই যাচ্ছে।নিজেকে খুব করে আটকানোর চেষ্টা করে রাহাত।নিজের অনুভূতিগুলোতে বাঁধ দিয়ে রাখার এক ব্যর্থ চেষ্টা।মধ্যবিত্ত সাধারণ ছেলেগুলোর জীবনে প্রেম ভালোবাসার মত অসহায়ত্বের বিষয় আর নাই।
এদের কাউকে ভালো লাগতে নেই,কারো ভালো লাগার কারণ ও হতে নেই।সব ক্ষেত্রেই বুকে বিঁধে থাকা কাঁটার মত চিন চিনে ব্যথাটা নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়।অনুভূতিগুলোকে পাশ কাটিয়ে,না দেখার ভণিতা করে।
ঝির ঝির করে বৃষ্টি পড়ছে।এ বৃষ্টি কখন থামবে কে জানে।সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে।ক্ষণিক বাদেই নিচে নেমে এলো মেয়েটা।রাহাতের পাশে দাঁড়াতেই একধরনের ঘোরের মধ্যে চলে গেলো ও।প্রতিবারই এ ব্যাপারটা ঘটে ওর সাথে।নামের সাথে খুব কম মানুষের মিল থাকে।এ মেয়েটার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ভিন্ন।মেয়েটার নাম পুষ্পিতা।
মেয়েটা আশেপাশে থাকলেই একধরনের সুবাস পাওয়া যায়।চন্দ্রগ্রস্থ রাতে হাসনাহেনার তীব্র নেশা ধরানো সুবাস।এটা সত্যি নাকি মিথ্যা জানেনা রাহাত।আজ হঠাৎই ঘোরের মাঝে ধাক্কা খেয়ে উঠে মেয়েটির কথা শুনে
-আজকের ওয়েদারটা খুব সুন্দর না?
-জী?আমাকে বলছেন?
-আপনি ছাড়া কেউ আছে নাকি এখানে?
-রাহাত অনুভব করছে হঠাৎ করেই হৃদস্পন্দনটা বেড়ে গেছে।তবু নিজেকে যথেষ্ট স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে বলল তা অবশ্য ঠিক।হ্যাঁ খুব সুন্দর লাগছে ওয়েদারটা।
-আপনার বৃষ্টি ভালো লাগে?
-অতটা খারাপ ও লাগে না।
-বৃষ্টিতে ভিজেছেন কখনো?
-না।
-ওমা!সেকি!বৃষ্টিতে ভিজেননি কখনো?ফুটবল খেলেননি কখনো বৃষ্টিতে?
-না।খেলিনি।
-আচ্ছা আপনি এরকম গাব গাছ কেন?আমিই বক বক করছি।
-আসলে কি বলব বুঝতে পারছিনা।
-লাইব্রেরীতে যেয়ে যখন বসে থাকেন?কিংবা ক্যাম্পাসে যখন আমাকে দেখে থমকে দাঁড়ান?তখন বলতে ইচ্ছা করে কিছু?
-না মানে...
-শুনুন আমি আপনার মত গাধা না।একটা মেয়ে ঠিক বুঝতে পারে তার চারপাশে কি হচ্ছে।তবু তাকে চুপ করে থাকতে হয়।সব বিষয় নিয়ে মাতামাতি করার স্বাধীনতা একটা মেয়েকে দেয়া হয়নি।
-তুমি খুব গুছিয়ে কথা বল।
-তুমি?আপনি থেকে তুমি হয়ে গেলো?
-ও সরি।কিছু মনে করবেন না।
-সরি বলতে হবে না।সন্ধ্যা হয়ে গেছে প্রায়।বৃষ্টি থামার লক্ষণ নেই কোনো।আমার বাসায় যাওয়াটা বেশ দরকার এখন।দেরী হলে সমস্যায় পড়তে হবে।একটা রিক্সা ঠিক করে দিনতো।
-এখানে তো রিক্সা নেই।
-রিক্সা নেই তা আমিও দেখতে পাচ্ছি।সে জন্যই আপনাকে বলছি।
-আমি ছাতা আনিনি।
-আপনাকে বৃষ্টিতে ভিজেই যেতে বলছি।যাবেন নাকি গাবগাছের মত দাঁড়িয়ে থাকবেন?
-আচ্ছা যাচ্ছি।
বৃষ্টিতে ভিজেই মেয়েটাকে রিক্সা ঠিক করে দিলো রাহাত।অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে ওর মাঝে।রিক্সা চলতে শুরু করেছে।রিক্সার চাকার গতিতে পিচঢালা পথে বৃষ্টির পানি ছিটকে পড়ছে।রাহাত তাকিয়ে আছে সেদিকে।একটু যেতেই রিক্সা থামিয়ে পেছন ফিরে তাকালো মেয়েটা।"আর বৃষ্টিতে ভিজে কাজ নেই চলে আসুন।আপনাকে সামনে নামিয়ে দিব।"রাহাত সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।খুব অল্প একটু দূরত্ব।তবু সে চায়না পথটা শেষ হয়ে যাক।অনুভবের মাঝে এ ভালোলাগা নিয়ে অনন্তকাল চলতে চায় সে।মেয়েটার মুখেও এক স্মিত হাসি।এই হাসির অনুভূতি বড়ই আনন্দের।
বৃষ্টির আগে আকাশে মেঘ জমে।ভালোবাসার ক্ষেত্রে জমে অনুভূতি।সে অনুভূতি খেলা করে অনুভবের মাঝে।মুখে প্রকাশ না পেলেও অনুভবের মাঝে সে বেড়ে চলে।বেড়ে চলে অপেক্ষার কোনো পথচলা হয়ে,আনন্দের কোনো স্মিত হাসি হয়ে।



ভালোলাগা ভালোবাসা!

(৩) কলেজের প্রথম বছর ছিল… পরিচয় হল… বন্ধুত্ব হলো… ভাল লাগলো… তারপর প্রেম নিবেদন… তারপর শুধুই ভালবাসা| নাহ্! এত নিরামিষ ছিল না আমাদের গল্প| এত নিরামিষ হলে হয়তো এভাবে সাতটা বছর পার করে দিতে পারতাম না দুজনে|
সেই সাত বছর আগের কথা… কিছুদিন হলো কলেজে ভর্তি হয়েছি| হঠাৎ অপরিচিত কারো একটা ই-মেইল নজরে পরলো| খুব সহজ একটা ধাঁধা লেখা ছিল ই-মেইলে| সাথে একটা মোবাইল নাম্বারো ছিল, আর লেখা ছিল যদি ধাঁধার উত্তর জানা থাকে তাহলে যেন সেই নাম্বারে পাঠিয়ে দিই| ধাঁধার উত্তর লিখে পাঠিয়ে দিলাম আর জানতে চাইলাম তার পরিচয়, তবে ই- মেইলের উত্তর ই-মেইলেই…
মোবাইলে দিয়ে নিজের মোবাইল নাম্বারটা একটা অপরিচিত মানুষকে দিয়ে বিপদে পরবো নাকি!!?? কিছুদিন পর আবিষ্কার করলাম ছেলেটা আমার সেকশনেরই! কিন্তু কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না কে সেই শাখামৃগ যে আমাকে এত দুশ্চিন্তায় ফেলে দূরে বসে মজা নিচ্ছে!!?? পরে জানতে পারলাম যার দিকে কখোনো চোখই পরেনি, যার নামটাও কখোনো জানা হয়ে ওঠেনি ছেলেটা সেই… সানিয়াত… সানিয়াত মোহাম্মদ সারোয়ার হোসেন|
বন্ধুত্ব হলো… খুব ভাল বন্ধুত্ব হলো… রাতে মোবাইলে কথা না বললে চলতোই না… ধীরে ধীরে কখোন যে বন্ধুত্বটা দুর্বলতা হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না! হয়তো নিজেকে বা ওকে বুঝতে দিতে চাইতাম না অনুভূতিটা| ভয় হতো… যদি বন্ধুত্বটাই হারিয়ে ফেলি!?
তবু মনের মাঝে কোন এক কোণায় হালকা ব্যথা অনুভূত হতো, যখোন ও ঐ সেকশনেরই সবচেয়ে সুন্দর মেয়েটার কথা বলতো| হালকা ব্যথা বললে বোধহয় ভুল হবে… আগুনের একটু আঁচ লাগলেই যেমন জ্বলা শুরু করে… আমারো তখোন ভেতরটা জ্বলতো! একটা কথা আছে না… “বুক ফাটে তাও মুখ ফোটেনা”… ঠিক ঐ রকম!
জানুয়ারী ২০০৫ থেকে ডিসেম্বর ২০০৫… আমাদের বন্ধুত্ব আরো গাড়ো হলো… আমাদের ছোট খাট পছন্দ অপছন্দ শেয়ার করা হলো| যদিও আমাদের ক্লাসমেটদের ধারণা আমরা তখোন থেকেই প্রেম করি| ধারণাটা আরো গাড়ো হয়েছিল যখন ও ক্লাসের একটা ছেলেকে আমাকে উত্তক্ত করার জন্য ঝাড়ি দিয়েছিল| ধারণাটা নি্শ্চিত সন্দেহের রূপ নেয় যখন আমি ওর হাতে কলেজের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে একটা চিঠি ধরিয়ে দিই|
চিঠিতে কি লিখেছিলাম মনে নেই, তবে সেটা কোনো প্রেমপত্র ছিল না এটা নিশ্চিত… সেটা ছিল ওর ওপর আমার অভিমানের বহিঃপ্র্রকাশ মাত্র| ও আমাকে এখন প্রায়ই বলে চিঠিতে নাকি অসংখ্য বার আমি লিখছলাম “আমি তোমার খুব ভাল Friend হিসেবে বলছি…”| সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিলো... চিঠিটা ওর পকেটে ছিল... বৃষ্টিতে আমার চিঠিটা নাকি ভিজে একাকার|তার কিছুদিন পর আমি আমার ২য় বর্ষে কলেজ বদলিয়ে ফেললাম| ফিরে গেলাম আমার স্কুলেরই কলেজ শাখায়|
তারপর আমার মোবাইল হারিয়ে গেল… সাথে ওর নাম্বারটাও| সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ| মাঝেমাঝে ই-মেইল Check করতাম… যদি ও কিছু পাঠায়… কিন্তু দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিছুই পেতাম না| নিজেকে সান্তনা দিতাম… এই বুঝি ভাল হলো… Out of sight, out of mind!

পর্ব : ২

জানুয়ারী ২০০৬ থেকে ২০০৬ ডিসেম্বর… এর মাঝে অনেক উত্থান পতন হয়েছে দুজনেরই… এসেছে কিছু পরিবর্তন… ৪ বছর বয়স বেড়েছে… কলেজ শেষ হয়েছে… ২০০৭ এর জানুয়ারী থেকে আমি মেডিকেল ছাত্রী হয়েছি আর ও হয়েছে ইঞ্জিনীয়ার ছাত্র| তখনো মাঝেমাঝে ই-মেইলCheck করতাম… হঠাৎ ২৯ জানুয়ারী ২০০৭ একটা ই-মেইল নজরে পরলো… from Md. Sarwer Hossain| আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না| ই-মেইলটা ওর নতুন Address থেকে পাঠিয়েছিল ওর Contact list এর সবাইকে| আমি আর সবাই এক হলাম!? এই ভেবে আর Reply করা হলোনা|
তারপর ২১ ফেব্রুয়ারী ২০০৭ আরেকটা ই-মেইল এলো| ই-মেইল পড়ে প্রথমে খুব রাগ হলো… কারণ as usual সেখানে আমাকে Jealous করানোর মত কথা লেখা ছিল| ই-মেইলের শেষ লাইন গুলো ছিল এরকম “SunSi dr ri porteSo khubi valo. amr amma Sune khub khuSi hoiSe. kau dr hoiSe Sunle amma khuSi hoya jay, amder aaSe paSe Sob to enginr tai. ajk to monehoy tmr bondo. ok valo thako.... bye… connection raikho amak vuila gaSo ? ? ! ? ! ! ! ?”
তখন কেন জানি আর রাগ করে থাকতে পারলাম না… reply একটা করেই দিলাম| তারপর আবার শুরু হলো যোগাযোগ| ও যেমন আমাকে প্রায়ই Jealous করানোর মত কথা বলতো আমিও ওকে সব সময় Jealous করার চেষ্টা করতাম… কিন্তু ওর কোনো প্রতিক্রীয়াই ছিলনা! খুব রাগ হতো আমার!
২০০৮ এর ১৩ ফেব্রুয়ারী… আমি ওকে “Yahoo!” তে Chat-এ বেশ ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “আচ্ছা, তোমার কাল কি কোনো Programme আছে?” ও বললো, “নাহ্, কাল কি Programme থাকবে? কেন থাকবে?” আমি বললাম, “তাহলে আমরা কি কাল TSC-তে দেখা করতে পারি?” আমি ভেবেছিলাম ও “না” বলবে| কিন্তু ও বললো “হ্যাঁ”!! বলে আমার বিপদ বাড়িয়ে দিল|
প্রচন্ড রকমের ভয় ভর করলো মাথায়| এতই ভয় আর উত্তেজনা পেয়ে বসলো আমায় যে আমার হারিয়ে যাওয়া মোবাইলের সাথে যে ওর মোবাইল নাম্বারটাও যে হারিয়ে গিয়েছে সেটাও ভুলে গিয়েছিলাম| আর হঠাৎ করে ওর নাম্বারটাও কিছুতেই মনে পড়ছিল না| কিন্তু ততক্ষনে আমরা Sign out করে ফেলেছি| হঠাৎ মনে পরলো একটা ডায়রীতে ওর নাম্বার লিখে রেখেছিলাম, কিন্তু কোনো লাভ হলোনা…
ডায়রীটা খুঁজে পেলাম না| তাই ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০০৮ TSC যাওয়া হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু বইমেলার মানুষের ভীরে আমরা দুজন দুজনকে খুঁজে পেলাম না| পরদিন “Yahoo!” তে ও আমাকে নাম্বার দিল… ঠিক হল ১৭ ফেব্রুয়ারী দেখা করবো| আবারো সেই ভয় আর উত্তেজনা পেয়ে বসলো আমায়|
১৭ ফেব্রুয়ারী ২০০৮… তখন আমি হোস্টেলে থাকতাম| TSC গেলাম… একমাস ব্যাপি বইমেলা… প্রচন্ড মানুষের ভীর| আমি পৌঁছেই ওকে ফোন দিলাম… ও কাছেই কোথাও ছিল… ৫ মিনিট অপেক্ষা করতে বললো| এই ৫ মিনিটে আমার ভয় ক্রমোশ বেরেই চললো| মাথায় কত চিন্তা ভর করলো! এই প্রথম আমি আর ও কোথাও এভাবে দেখা করতে যাচ্ছি… কতদিন পর দেখবো ওকে… ২ বছরের বেশি… ও কি পাল্টে গেছে… নাকি সেই আগের মতই আছে… ওকে চিনতে পারবো তো বা ও আমাকে চিনতে পারবে তো!?
এরকম কত ভয়…! তারপর অতি প্রতিক্ষীত ৫ মিনিট শেষ হলো… দূর থেকে দেখেই চিনতে পারলাম ওকে| নাহ্! খুব বেশি পাল্টায়নি ও… তবে একটু মোটা হয়েছে… মোটা বললেও ভুল হবে… স্বাস্থ্যটা একটু ভাল হয়েছে| ও কাছে এলো… আসার পর আমি কিছুতেই ওর দিকে তাকাতে পারছিলাম না| ভয় অথবা লজ্জা… কিছু একটা কাজ করছিল| লজ্জা পাচ্ছিলাম হয়তো লজ্জা নারীর ভূষণ বলে, আর ভয়… কারণ… ও যদি বুঝে ফেলে আমার দুর্বলতা! সন্ধ্যা ৭.৩০ টা পর্যন্ত ছিলাম ওর সাথে|
ও ওর স্বভাব সুলভ খুব নরমাল আচরণ করছিল, আর আমি খুব চেষ্টা করছিলাম নরমাল হওয়ার… কিন্তু ব্যর্থ চেষ্টা! ও আমাকে রিকশায় করে হোস্টেলে পৌঁছে দিয়ে গেল| হোস্টেলে ফেরার পর থেকে শুধু মনে হচ্ছিল ও কিছু বুঝলো না তো!!?? সত্যিই তাই… ও সেদিন বুঝে গিয়েছিল… কিন্তু ও আমাকে বুঝতেই দেয়নি যে ও বুঝতে পেরেছে|
একদিন কথায় কথায় মনে পড়লো আমি ওকে কলেজে থাকতে জোড়া ডলফিনের একটা শো-পিস Gift করেছিলাম| লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম… কি নির্লজ্জ মেয়েরে বাবা আমি! ও বললো ওটা নাকি তখনি ওর Friend দের বিশেষ কৌতুহলের কারণে দুই টুকরা হয়ে গিয়েছিল| সাথে সাথে আমার মনটাও দুই টুকরা হয়ে গেল| তারপর ও বললো সেটা নাকি ও আঠা দিয়ে জোড়া লাগিয়েছে… তখন থেকে সেটা ওর Aquarium এ শোভা পাচ্ছে|
এই কথা শোনার পর আমার মন তো জোড়া লাগলোই… মনে হলো কোথা থেকে যেন হালকা একটা হাওয়া স্বজোরে একটা দোলা দিয়ে গেল| মনে হলো… তাহলে কি ওর ও মাঝে দুর্বলতাটা কাজ করে!!?? তারপর থেকে আবার শুরু হলো আমার “Mission : Making Him Jealous”| এবার বোধহয় কাজ হলো…
৩০ জুন ২০০৮… নাহ্! ১ জুলাই ২০০৮… ৩০ জুন ২০০৮ রাত ১২টার পর… সকালেই আমারAnatomy Prof Written exam| ও আমাকে চমকে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “অনু, তুমি কি কোনো কারণে আমার প্রতি Weak?” যার সত্যিকার অর্থে মানে ছিল, “অনু, তুমি কি আমাকে ভালবাসো?” আমি কি উত্তর দিবো ভেবে পাচ্ছিলাম… আমার কি বলা উচিত যে আমি শুরু থেকেই Weak!!??
আমি বললাম… “কি হবে জেনে? তোমার কাছে আমার সব Problem এর Solution আছে, কিন্তু এই উত্তরের কোনো Solution নেই”| ও বললো… “বলেই দেখো… থাকতেও তো পারে”| আমি বললাম… “হ্যাঁ, আছে তোমার কাছে কোনো Solution?” ও বললো… “এভাবেই চলতে থাকি… কপালে থাকলে হবে”| নিজেকে খুব ছোট মনে হলো… মনে হলো “হে ধরণী! তুমি দ্বিধা হও, আমি তোমার ভেতর প্রবেশ করি”!

পর্ব : ৩

ভাবলাম এবার বুঝি বন্ধুত্বটাও হারালাম! ভাবলাম আমার ধারণা বোধহয় ভুল ছিল| কিন্তু না কিছুই শেষ হয়নি| ও খুব সহজেই যেকোনো ব্যপার সহজ করে ফেলতে পারে| আমরা আবার আমাদের চিরাচরিত Friendship-টাকেই ধরে রাখলাম|
২০ অগাস্ট ২০০৮… পরীক্ষা শেষে বাসায় আসলাম| ঐদিন রাতেও ১২টার পর ফোনে কথা হলো| হঠাৎ ও আমাকে বললো, “আচ্ছা অনু, ঐ যে ঐ টা একটু বলোতো”| আমি বললাম, “কি বলবো?” ও বললো, “ঐ যে তুমি যেটা Feel করো… ঐ যে কি যেন বলে না একজন আরেকজন কে”|
আমার বুঝতে বাকি রইলো না যে ও আমাকে দিয়ে কি বলাতে চায়! ওর মুখে আমার নামের উচ্চারণ শুনলেই তো আমার কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যায়… আমি সেখানে একটা মেয়ে হয়ে কিভাবে ওকে এই কথাটা বলি!? আমি অনেক “না না” করলাম পর… অনেক ঢং করলাম …ও আমাকে বললো, “বলো না একটু শুনি, দেখি কেমন লাগে!?” সব লজ্জার ডোর ছিড়ে বলেই ফেললাম… “I love you”… এত speed এ বলেছিলাম যে নিজেই বুঝতে পারিনি যে ও বুঝলো কিনা! বলেই ওকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন রেখে দিলাম| সেই রাত অনেক লম্বা ছিল… ঘুম-ই আসলোনা !
২৩ অগাস্ট ২০০৮… রাত ১২টার বেশি বাজে… অর্থাৎ ২৪ অগাস্ট ২০০৮… খুব ভয়ে ভয়ে লজ্জায় লজ্জায় ওর ফোন ধরলাম| আবারো ও শুনতে চাইলো… এবারো অনেক ঢং করার পর বললাম… এবার ও শুনতে চাইলো পর পর তিনবার… আমিও লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে বলে দিলাম|
মনের ভেতরটায় অদ্ভূত একটা ব্যথা অনুভব করলাম এই মনে করে যে “তুমি কি একবারও বলবা না?” আমি যখন এই চিন্তায় মগ্ন তখন আচমকা কানে বেজে উঠলো ওর কণ্ঠস্বর… “অনু, তুমি আমাকে মারবা!”
জানিনা কোথ্থেকে এক ফোঁটা অশ্রু চোখের কোণে আশ্রয় নিল| ভাবলাম… তাহলে কি ফুরালো আমার তিন বছর ছয় মাসের অপেক্ষার প্রহর? আমি যখন আবারো ভাবনায় মগ্ন তখন আবার আচমকা কানে বেজে উঠলো ওর কণ্ঠস্বর… “ANU, I LOVE YOU”…………………………………… মনে হলো আমার কর্ণ কপাট ভেদ করে সুমধুর সুর প্রবেশ করলো| মনে হলো কেউ আমায় প্রেমের অমৃত সুধা গলধিকরণ করালো| আর সেই কেউ… আমার সানিয়াত মোহাম্মদ সারোয়ার হোসেন|
এখন ও আমাকে মাঝে মাঝে বলে, “তখনই (কলেজে পড়ার সময়) তোমার weakness টা সামনে আনতা, তাহলে আর এতদিন একা থাকতে হতো না… অবশ্য আমারই দোষ… আমি তখনই লাই দিলে তখনই এটা সামনে আসতো|” ওকে jealous feel করানোর কথা উঠলে বলে, “আমি তো জানতাম তুমি কি চাইতা... আর জানতাম বলেই jealous হতাম না আর তুমি আরো বেশি জ্বলতা… খুব মজা লাগতো!” ফাজিল কোথাকার!
তারপর কত ঝড় ঝাপটা গেল… দুজনের পরিবারে জানাজানি হলো| ওর মা-বাবা খুব সহজেই মেনে নিলেন| আর আমার মা-বাবা ছিলেন প্রচন্ড প্রেম বিরোধী ছিলেন| কিন্তু আমরা কোনোভাবেই হাল ছাড়িনি| আমরা জানতাম, আমার বাবা আমাকে প্রচন্ড ভালবাসেন… তাই তিনি অপরিচিত একজনের হাতে মেয়েকে তুলে দিতে ভয় পাচ্ছিলেন| মা-বাবা ওর সাথে দেখা করলেন… কথা বললেন… Impressed হলেন|
তারপর আর কি! তারপর…. এক সাথে পথ চলা… মাঝে মাঝে একটু একটু ভালবাসার ঝগড়া… তারচেয়েও অনেক অনেক বেশি… সবকিছুর ঊর্ধে শুধুই আমাদের ভালবাসা|


Comments

Popular posts from this blog

📚খুবই মূল্যবান ৪০টি ছোট হাদিস, 📚নিজে পড়ুন, অন্যকে পড়ার সুযোগ 📚করে দিন।

👉✍১। রাসূল (সা:)বলেছেন আমার কথা (অন্যদের কাছে) পৌছিয়ে দাও, তা যদি একটি আয়াতও হয়। (সহীহ বুখারীঃ ৩২১৫) 👉✍২। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, কোন ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটকুই যথেষ্ঠ যে, সে যা শোনে (যাচাই ব্যতীত) তাই বলে বেড়ায়। (সহীহ মুসলিম, মুকাদ্দামা, অনুচ্ছেদ -৩) 👉✍৩।রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করবে সে জাহান্নামে যাবে। (দেখুন সহীহ বুখারীঃ ১০৭,১০৯,১০৯,১১০,১১১ সহীহ মুসলিম, মুকাদ্দামা) 👉✍৪।পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহ্‌ সন্তুষ্ট আর পিতা-মাতার অসন্তুষ্টে আল্লাহ্‌ অসন্তুষ্ট। (তিরমিযী, সনদ হাসান, মিশকাত হা/৪৭১০) 👉✍৫। পাঁচ ওয়াক্ত সলাত আদায় করলে পঞ্চাশ ওয়াক্ত সলাতের সওয়াব পাওয়া যায় (সহীহ বুখায়, মুসলিম ও তিরমিযীঃ ২১৩) 👉✍৬। ব্যক্তি এবং শিরক ও কুফরের মাঝখানে সলাত ছেড়ে দেওয়াই হচ্ছে ব্যবধান। (সহীহ মুসলিমঃ ১৫৪,১৫৫, মিশকাত) 👉✍৭। ক্বিয়ামতের দিন বান্দার কাজসমূহের মধ্যে সর্বপ্রথম সলাতের হিসাব নেওয়া হবে। (সহীহ তিরমিযীঃ ৪১৩, ইবনু মাযাহঃ ১৪২৫,১৪২৬) 👉✍৮। যে ব্যক্তি ফজর ও আসরের নামায আদায় করবে সে জান্নাতে যাবে। (সহীহ বুখারীঃ ৫৪৬) 👉...

মেয়ে, তোমার সাইজ কত?"

"মেয়ে, তোমার সাইজ কত?" ফেসবুকে কেউ যদি এমন স্ট্যাটাস দেয় তাহলে ফ্রেন্ড লিস্টের ভদ্র, অভদ্র পুরুষগণ যার যা কিছু আছে তা নিয়ে আক্রমণ শুরু করবেন ৷ ভদ্র মহিলাগণ সমস্বরে জানতে চাইবেন, ঘরে মা-বোন আছে নাকি নেই? রাস্তা-ঘাটে কোন তরুণীর সাইজ জানতে চাইলে, তার বাবা, ভাই, চাচা, মামা, খালু, আত্মীয়-অনাত্মীয়, পাড়া-পড়শীগণ পিঠের চামড়া তুলে চিইল্লা কাইট্টা লবণ লাগাই দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবেন ৷ কোন এক জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছেন, ''বাজারে যদি মাগনা দুধ পাওয়া যায় তাহলে কষ্ট করে গাই (গাভী) পোষে কে?" কেউ যদি মাগনা সাইজ জানায় তাহলে এত বড় রিস্ক নিতে যাবে কোন স্টুপিডে! সাম্প্রতিক সময়ে "মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ - ২০১৭" প্রতিযোগিদের নিয়ে মিডিয়ার মাতামাতি দেখে ডিম পাড়া মুরগীর কথা মনে পড়েছে ৷ হাতি একশ কেজি ওজনের বাচ্চা জন্ম দিয়েও চুপ থাকে, আর মুরগী একশ গ্রাম ওজনের ডিম পেড়েই চিৎকার করে ৷ প্রায় পঁচিশ হাজার তরুণী উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে ৷ এই পঁচিশ হাজার তরুণী থেকে মাত্র একজন! হ্যাঁ, মাত্র একজন "মিস ইউনিভার্স" প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করার সুযোগ পাবে ৷ বাকি ...